দীর্ঘ ৮ বছর নিখোঁজ থাকার পর গত ৫ আগস্ট মধ্যরাতে ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি পান জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাশেম আরমান। ৬ আগস্ট পরিবারের কাছে ফেরেন তিনি। এরপর থেকেই আয়নাঘরে তার ‘বন্দিদশা’ এর মধ্যেই শনিবার (১৭ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ আরমানের পরিবারের বরাত দিয়ে চাঞ্চল্যকর আরো একটি তথ্য জানিয়েছে।নিয়ে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য সামনে আসছে
এক প্রতিবেদনে টেলিগ্রাফ জানায়, কাশেম আরমানকে ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্ত করতে যুক্তরাজ্যের ‘সিটি মিনিস্টার’ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে সহায়তা চেয়েছিল তার পরিবার। তবে তারা সহায়তা পাননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, খালা শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় এক দশক ধরে আটক ব্রিটিশ-প্রশিক্ষিত ব্যারিস্টার কাশেম আরমানকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন টিউলিপ। লেবার পার্টি থেকে জয় পাওয়া টিউলিপ সিদ্দিক গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
এতে আরও বলা হয়, ২০১৬ সালে নিখোঁজ হওয়া ৪০ বছর বয়সী কাশেম আরমানের আইনজীবীরা বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর ব্যক্তিগত যোগাযোগ ব্যবহার করে তাকে ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি দিতে পারতেন। তবে তিনি তা করেননি।
কাশেম আরমান নিখোঁজ হওয়ার এক বছর আগে ২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেডের এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘খালা আমাকে সবচেয়ে বেশি শিখিয়েছেন। আমি তার কাছ থেকে রাজনীতি সম্পর্কে সবকিছু শিখেছি। সামাজিক ন্যায়বিচার, কীভাবে প্রচারণা চালাতে হয় এবং কীভাবে জনগণের কাছে পৌঁছাতে হয়, এসব শিখেছি।’
টেলিগ্রাফ লিখেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে, টানা ১৫ বছরেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধীদের আক্রমণ করা হয়, গ্রেপ্তার করা হয় এবং গোপনে বন্দি করা হয় অনেককে। একই সঙ্গে চলেছে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডও। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাশেম আরমানকে নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
আইনজীবীরা বলেছেন, কাশেম আরমানকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন তার পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা এবং শত শত মানুষের গুমের জন্যও তারা দায়ী।
আইনজীবী মাইকেল পোলাক বলেন, ‘আয়নাঘর নামক একটি গোপন অভ্যন্তরীণ বন্দিশালায় কাশেম আরমানকে বন্দী করে চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। ভয় ছিল, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘কাশেম আরমানকে আটক করা শেখ হাসিনার নীতির প্রতিফলন। এটা স্পষ্ট যে, তার শাসনামলে জোরপূর্বক গুম এবং নির্বিচারে আটক রাখার একটি সরকারি নীতি ছিল। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাশেম আরমনাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘আমি এবং কাশেম আরমানের পরিবার উভয়ই কাশেম আরমানকে মুক্তি দিতে টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালার কাছে তদবির করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু আমরা কোনো সহায়তা পাইনি। তিনি আমাদের কোনো সহায়তা করেননি।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।