তিন বছর তিন মাস পর অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে করা

মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৪ , ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ আপডেট: আগস্ট ১৫, ২০২৪ , ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ
তিন বছর তিন মাস পর অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলাম। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন আজ বুধবার এ আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রোজিনা ইসলামের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।

আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার বলেন, দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আদালত আজ বুধবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম।

এর আগে সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। তার আগে গতকাল এক বছরের বেশি সময় পর আদালত থেকে পাসপোর্ট ফিরে পান রোজিনা ইসলাম। আদালতের নির্দেশে ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি পাসপোর্ট জমা দিয়েছিলেন তিনি। এরপর কয়েক দফায় আদালতে আবেদন করলেও তার পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়নি।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পিবিআইয়ের পরিদর্শক নূর নবী সরকার মামলা থেকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাই তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হলো।

আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, অধিকতর তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (তথ্যগত ভুল) দাখিল করেছে পিবিআই। পিবিআইয়ের আবেদন মঞ্জুর করা হলো।

এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবিও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সপক্ষে কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি।

পরে ডিবির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেন মামলার বাদী। তখন আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

২০২১ সালের ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। একই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এক সপ্তাহের মাথায় ওই বছরের ২৩ মে তিনি জামিনে ছাড়া পান। এর পর থেকে তিনি আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসছেন।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম ‘সেরা অদম্য সাহসী’ হিসেবে ২০২১ সালে ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। সাংবাদিকতার মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভূমিকা রাখার জন্য ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর রোজিনা ইসলামকে অ্যান্টিকরাপশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
top