কওমি আলেম ও বক্তাদের সামনে কথা বলছেন জামায়াত আমির।
জামায়াতের কার্যালয়ে দেশের কয়েকজন কওমি আলেম এক মতবিনিময়ে অংশ নিয়েছেন। যাদের কেউ কেউ রাজনীতিক, হেফাজতের নেতা ও ওয়াজ-মাহফিল করে থাকেন। এর মধ্যে কওমি মাদ্রাসায় ‘মানহাজি’ হিসেবে পরিচিত বক্তারাও রয়েছেন। গত রোববার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে এ সভা হয়।জামায়াত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করেন—মাওলানা মুফতি মহিউদ্দীন কাসেমী, মুফতি খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি রেজাউল করীম আবরার, মাওলানা আব্দুল মজিদ আতহাবী, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি রাদেশ বিন নূর, মাওলানা মুনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, মাওলানা মুফতি আবুল কালাম, মাওলানা শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা আব্দুল মোমেন নাসেরী, মাওলানা আবুল কাশেম কাসেমী, ইসলামি বক্তা মাওলানা আলী হাসান উসামা প্রমুখ।
আলেমদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘এখন থেকে আমরা সবাই একে অপরের জন্য। সবাই সিসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকব, ইনশাআল্লাহ। অতীতের কোনও আচরণের জন্য আপনারা যদি সামান্য কষ্ট পেয়ে থাকেন, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। আশা করি, আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাদের ভাই। আপনারা যদি আমাদের ক্ষমা না করেন, তাহলে আমাদের ক্ষমা করবে কে? আমি আপনাদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাচ্ছি, আপনারা কী মন সাফ করে আমাদের ক্ষমা করলেন?,’
হেফজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘আমিরে জামায়াত সব মারকাজের আলেমদেরকে একত্রিত করে সবাইকে ধন্য করেছেন। আমাদের এই ঐক্য বা হাজারো ঐক্য কোনও কাজে আসবে না, যদি আমরা ব্যালটের যুদ্ধে একত্রিত হতে না পারি। আমাদের দেশ গণতান্ত্রিক দেশ। তাই আমাদেরকে গণতান্ত্রিক সিস্টেমে আগাতে হবে।’
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী বলেন, ‘মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহ.) থেকে আমাদের এই দলের পদচারণা। বাতিল সর্বদা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু আমাদের মাঝে হাজারো মতবিরোধ। এখন সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
খেলাফত আন্দোলনের আমিরে শরিয়ত মুফতি আবু জাফর কাসেমী বলেন, ‘দল-মত-নির্বিশেষে আমাদের এক হতে হবে। আমাদের অতীতের সব ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। আমাদের আর কোনও রাজনৈতিক দলকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।’
জামেয়া মাদানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মনিরুজ্জামান কাসেমী বলেন, ‘আমরা ঐক্য ঐক্য বলতেছি। কিন্তু আমরা তো ঐক্যবদ্ধ ছিলামই। মাঝে কিছুদিন আমরা দূরে সরে গেছিলাম। বিচ্ছিন্ন হয়ে আমরা সকলেই নির্যাতিত হলাম। এখন আমাদের সবাইকেই আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের সব থেকে বড় ইসলামী দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মুহতারাম আমিরে জামায়াতের সঙ্গে আমার অনেকবার দেখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী মানুষ। তাই আমার বিশ্বাস, তিনিই পারবেন আমাদের সবাইকে এক প্লাটফর্ম-এ দাঁড় করাতে, ইনশাআল্লাহ।’
হেফাজতের আরেক শীর্ষ নেতা মুফতি আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকে আমরা সবাই একত্রিত হতে পেরেছি, সে জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার জানা মতে, জামায়াতে ইসলামীর আমির প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখেন। তিনি একজন মুখলিস ব্যক্তি। যদিও সরাসরি প্রশংসা করা ঠিক না, তবুও জানার জন্য বলছি। তাই আমার মন বলে যে, তার দ্বারাই একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ।’
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং উলামা কমিটির সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে এবং উলামা কমিটির সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানীর সঞ্চালনায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।