বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে ব্যঙ্গ করার অভিযোগে বগুড়ায় আদালত চত্বরে আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে কান ধরে ওঠবস করানোর পর বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে ৷ এ ঘটনার জন্য তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের দায়ী করেছেন।
জানা যায়, রোববার দুপুরে হিরো আলম ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রচারণার সময় মারধর ও ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি একই আসনে উপ-নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওবায়দুল কাদের, বগুড়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ৩৯ জনকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়ের করার পর আদালত চত্বরে হিরো আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে মামলার বিষয়ে কথা বলার প্রস্তুতি নেন। এমন সময় কয়েকজন যুবক তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ এনে হিরো আলমের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রথমে তারা হিরো আলমকে কান ধরে উঠ-বস করিয়ে ক্ষমা চাওয়ার পরে তারা সড়কে নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করেন।
মারধরের শিকার হওয়ার পর হিরো আলম বলেন, ‘এক স্বৈরাচারের পতনের পর আরেক দল নিজেদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুরু করেছে। এটা কি স্বাধীনতা? প্রকাশ্যে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হলো। আমি কখনো তারেক জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি করিনি। ডিবির হারুন আমার পরিবারকে জিম্মি করে রিজভী সাহেবের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছিল। এই কথা আগেও বলেছি। এরপরও আমাকে আদালতের মতো জায়গায় আপনাদের সামনে পেটানো হলো।’
হিরো আলম বলেন, ‘আমি মামলা করে নিচে আসার পরে বিএনপির একটা দল আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করায়। এরপরে আমাকে কিল-ঘুষি মেরেছে মুখে ও মাথায়। বুকে ও শরীরের অন্য জায়গায়ও মারে। তাদের অভিযোগ, আমি নাকি কোনো বক্তব্যে তারেক জিয়াকে গালিগালাজ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি কখনো তারেক জিয়াকে গালিগালাজ করিনি। তাদের কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে আমি জুতার মালা গলায় দিয়ে ঘুরবো।’
‘বিএনপি এখনো ক্ষমতা পায়নি। তার আগেই দেশজুড়ে অরাজকতা শুরু করেছে। আমরা আন্দোলন করে এক স্বৈরশাসক তাড়িয়েছি কি আর এক স্বৈরশাসককে ক্ষমতায় আনার জন্য?,’ বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন হিরো আলম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও বগুড়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছেদ বলেন, ‘হিরো আলম মামলা করতে এসেছিলেন সরকারি লোকজন ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বিএনপির লোকজন তাকে মারধর না করে বরং খুশি হওয়ার কথা।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘বিএনপির কোন লোকজন তাকে মেরেছে, কারও নাম বলতে পারবেন তিনি? আসলে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এই অভিযোগ এনেছেন হিরো আলম। বিএনপির লোকজন তাকে মারেনি।’
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা বলেন, ‘হিরো আলমের উপর যারা হামলা করেছে তারা দুর্বৃত্ত। আমাদের দলের কোন নেতা-কর্মী এ কাজ করেনি।’