গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের সরকারের বিরুদ্ধে এটিই সবচেয়ে বড় সমাবেশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে জেরুজালেমে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে লাখো মানুষ। তারা সামরিক বাহিনীর দায়িত্ব থেকে অতি-নিষ্ঠাবান ইহুদিদের ছাড় দেওয়ার বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
গত বছর একই ধরনের ব্যাপক বিক্ষোভে নেতানিয়াহু সরকারের অবস্থান টালমাটাল হয়ে উঠেছিল। ওই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কিছু গোষ্ঠীসহ অনেকগুলো প্রতিবাদী গোষ্ঠী রোববার ইসরায়েলের পার্লামেন্ট কানেসেটের সমানে এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ থেকে সরকার পরিবর্তনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি পতাকা দুলিয়ে ‘এখনই নির্বাচন দাও’ বলে শ্লোগান দেয়।
ইসরায়েলিদের জন্য সামরিক পরিষেবায় অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিবাদকারীরা সামরিক পরিষেবার দায়িত্বে কাউকে ছাড় না দিয়ে সবার সমান অংশগ্রহণের দাবি জানান।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের নজিরবিহীন আক্রমণের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। বেশ কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে এ যুদ্ধে।
ইসরায়েলের এন-টুয়েলভ নিউজ জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের সরকারের বিরুদ্ধে এটিই সবচেয়ে বড় সমাবেশ বলে ধারণা করা হচ্ছে। হারেৎজ ও ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, সমাবেশে প্রায় লাখখানেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
হামাসের যোদ্ধাদের হামলায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের। এর পাশাপাশি হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে থেকে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে। দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের এ হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
সমাবেশে যোগ দেওয়া নুরিত রবিনসন (৭৪) বলেন, “এই সরকার পুরোপুরি ও সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তারা আমাদের নরকে নিয়ে যাবে।”
রয়টার্স বলছে, ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় যুদ্ধ ইসরায়েলের সমাজে বহুদিন ধরে বিদ্যমান দ্বন্দ্বের উৎসগুলোকে আরও তীব্র করে তুলেছে। ইহুদি ধর্র্মীয় শিক্ষালয়গুলির অতি-নিষ্ঠাবান শিক্ষার্থীদের দেশটির সামরিক বাহিনীর বাধ্যতামূলক দায়িত্ব থেকে ছাড় দেওয়া এর অন্যতম। এর জেরে নেতানিয়াহুর জোট সরকারও নড়বড়ে হয়ে গেছে।
এই ইস্যুটি নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলা অচলাবস্থা নিরসনে ৩১ মার্চের মধ্যে আইন প্রণয়ণের জন্য সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। শেষ মুহূর্তে আবেদন করে এই সময়সীমা আরও একমাস বাড়িয়েছেন নেতানিয়াহু। এরপরই রোববার তার সরকারের বিরুদ্ধে অন্যতম বৃহত্তম এ সমাবেশটি হয়।