সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ের কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশে শ্রমিক অধিকার নিয়ে পর্যাপ্ত আইন থাকলেও সেগুলো কার্যকরের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি খাতে সংশ্লিষ্টদের সমন্বয় দরকার বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
রোববার ঢাকায় ‘সামাজিক ন্যায়বিচার এগিয়ে নিতে শোভন কাজের প্রসার’ বিষয়ক জাতীয় সংলাপে এ মত দেন তিনি।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এ সংলাপে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আইনের প্রতিপালন ও কার্যকরের ক্ষেত্রে যে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, তা পূরণে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় দরকার।
সরকার, শিল্প ও শ্রম খাতের প্রতিনিধিদের নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা যৌথভাবে এ সংলাপ আয়োজন করে।
স্বল্পোন্নত দেশের যাত্রায় অনানুষ্ঠানিক খাতে থাকা শ্রম শক্তির বড় অংশকে সেখান থেকে বের করে আনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “আমাদের বড় একটা অংশের অনানুষ্ঠানিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
“কর্মক্ষমতা ও যোগাযোগ সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের পূর্ণ সুবিধা নিশ্চিতে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।”
দেশে-বিদেশে ন্যূনতম মজুরির দাবির আন্দোলনের মনোযোগ আকর্ষণের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “অটুট শিল্প সম্পর্কের স্বার্থে বিভিন্ন খাতে নির্দিষ্ট সময় পরপর ন্যূনতম মজুরির পর্যালোচনা ও সংশোধন প্রয়োজন। সেটা হতে হবে সমন্বিত দরকষাকষির ভিত্তিতে, রাস্তায় বিক্ষোভ করে নয়।”
সংলাপে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “শোভন কাজের প্রচার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের অগ্রগতির জন্য বদ্ধপরিকর আমরা।
“একইসাথে আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব যেখানে সকল শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং তাদের অবদানের মূল্যায়ন হবে।”
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পৌটিআইনেন বলেন, “সফল এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য বাংলাদেশকে প্রধান উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো-যেমন চাকরি সৃষ্টি, প্রমাণভিত্তিক মজুরি নীতিমালা এবং পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের প্রতি জোর দেওয়া দরকার।
“আইএলও এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।”
তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাণিজ্য সুবিধা হারানোর সম্ভাবনা, বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স মানার বাড়তি বাধ্যবাধকতা আসবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা শ্রম সংস্কার রোডম্যাপ এবং ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যানের বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ” আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা সঠিক ও কার্যকরি নীতিমালা তৈরি করছে। এর মূল লক্ষ্য আমাদের কর্মশক্তির জীবনযাত্রার উন্নতির পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে তাদের মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। “
সংলাপে তিনটি প্যানেল আলোচনায় যুক্ত হয়েছেন সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা। যেখানে ’গ্লোবাল এক্সেলারেটর ফর জবস’, প্রমাণভিত্তিক জাতীয় মজুরি নীতিমালা এবং পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য এর মত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রতিটি প্যানেলে কর্মস্থলের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলোর উপর বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সরকার, মালিক, শ্রমিক, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, উন্নয়ন অংশীদাররা শোভন কাজ নিশ্চিত করা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার উৎসাহিত করার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রতি জোর দেন।