শুভাড্যা খাল খননের ৪ প্রকল্প
ঢাকার উপকন্ঠ কেরানীগঞ্জের সুপেয় পানির অন্যতম উৎস ছিল শুভাঢ্যা খাল । গত ১৫ বছরে খাল খননের ৪ প্রকল্প বাস্তবায়ন না করায় শুভাড্যা খাল এখন দখলে দূষনে মৃত প্রায় । খাল খননের ৪ প্রকল্পের ১২ কোটি টাকা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদের পেটে ।
একসময় কেরানীগঞ্জে সুপেয় পানির অন্যতম উৎস ছিল শুভাঢ্যা খাল । এতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন অনেক পরিবার । খালে চলাচল করত যাত্রীবাহী, মালবাহী বড় বড় নৌযান। এখন চলাচল তো দূরের কথা খালের পাশ দিয়ে হাঁটাও যায়না । ৭ কিলোমিটার খালেরটি ময়লা ফেলে দখলে নিয়েছ স্থানীয় আওয়া লীগের প্রভাবশালী নেতারা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চরকালিগঞ্জ, কালিগঞ্জ বাজার, জোড়া ব্রিজ, নয়া শুভাঢ্যা, কদমতলী, চরকুতুব, ঝাউবাড়ি, বেগুনবাড়ি, গোলামবাজার এলাকায় গার্মেন্টস এর টুকরো কাপড়, ময়লা আবর্জনা ও গৃহস্থালির বর্জ্যে ভরাট হয়ে গেছে খালটি । খালের অনেক জায়গায় খালের কোন অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাবে না ।
জানা যায়, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শুভাঢ্যা খালের চরকালিগঞ্জ থেকে গোলামবাজার পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। ওই সময় খালের ৩ কি.মি. অংশের উভয় পাশে ১৮৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পাশাপাশি খাল খনন করে সেখানে নাব্য সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই আবারো দখল দূষণের কবলে পড়ে খালটি। পরে ২০১২ সালের জুলাই মাসে উপজেলা প্রশাসন ৫৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে খালটি পুনর্খনন ও উদ্ধারের কাজ শুরু করে। ২০১৫ সালে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলাবায়ু পরিবতর্ন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ১০ কোটি ব্যয়ে খালের ১ দশমিক ৩ কি.মি. এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পুনর্খনন ও তীর সংরক্ষণসহ খালের দুই পাড়ে ব্লক বসিয়ে খালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ সৃষ্টির প্রকল্প নেয় সরকার। এছাড়া গত বছর উপজেলা প্রশাসন দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচি ও কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে খালের বর্জ্য অপসারণ ও নাব্য সৃষ্টির কাজ করার জন্য প্রকল্প দেওয়া হয়। তবে এপর্যন্ত কোন প্রকল্পই বাস্তবায়ন হয়নি। যে কারনে খাল ভরাট, দখল ও দূষণ থামছে না। নাম না বলা শর্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন বলছে খাল খননের সকল প্রকল্পের টাকা আত্তসাৎ করেছে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ । খাল খননে কোন টাকাই ব্যয় করা হয়নি।
গোলাম বাজারের বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, ছোটবেলায় এই খালে গোসল করেছি, খালের পানি পান করেছি। শ্যামবাজার থেকে মালামাল নিয়ে নৌকাযোগে সরাসরি গোলামবাজার ঘাটে আসতাম। এখন আর সেই সুযোগ নেই। খালটি ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। তিনি বলেন, পরিবেশ ও এলাকাবাসীর স্বার্থে সরকারের উচিত খালটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।