কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায় সন্ত্রাসী হামলায় সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মালম্বী রাজীব ভট্টাচার্য্য নামের এক ব্যবসায়ী গুরুতর জখম হয়েছে । গত ১০অক্টোবর রবিবার সকালে মনোহরগঞ্জ উপজেলায় মৈশাতুয়ার বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। বর্তমানে তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাজীব ভট্টাচার্য্য মনোহরগঞ্জ উপজেলাধীন মৈশাতুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্দিন যাবত স্থানীয় শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভূ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন এবং পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ঢাকার ফকিরাপুল এলাকায় তার প্রিন্টিংয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি বর্মানে আশংকামুক্ত। তবে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এখনো জখমের চিহ্য রয়েছে।
সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত রাজিব ভট্টাচার্য্য বলেন, বেশ কিছুদিন থেকেই কতিপয় লোক আমাকে প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও ভয়ভীতি প্রদান করে আসছিল। ফলে প্রাণ ভয়ে আমি ও আমার পরিবারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মীয়স্বজনদের বাসায় আত্মগোপনে ছিলাম।আমার বাবা দীর্ঘদিন অসুস্থ্য থাকায় ঘটনারদিন সকালে আমি বাবাকে দেখতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসি। মনোহরগঞ্জ উপজেলা থেকে মৈশাতুয়া বাজার এলাকায় পৌছামাত্র সন্ত্রাসীরা আমার পথরোধ করে দেশীয় বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এসময় আমার চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন দৌড়ে এসে আমাকে গুরুতর জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার অপরাধ আমি সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মালম্বী। হামলাকারীরা বিএনপি, জামায়াত এবং ধর্মীয় সংগঠনের উগ্রপন্থী কর্মী ও সমর্থক ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভূক্তভোগী ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাজীব ভট্টাচার্য্য স্থানীয় একটি মন্দিরের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবং সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের পরিচয়দানকারী কিছু নেতাকর্মী উক্ত ব্যক্তিকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে আসছিল। তার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঊষাতন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, সরকার বিরোধী আন্দোলন ও নানা পটভূমিতে সংখ্যালঘুদের টার্গেট (লক্ষ্যবস্তু) করে হামলার ঘটনা ঘটে আসছে। এসব হামলার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে সংখ্যালঘু শূন্য করা। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়াও বিভিন্ন সময় বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর ওপরও হামলা হয়েছে। আমরা এর প্রতিকার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা চাই।